Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-07-26T10:32:35Z
সিলেট

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত

বিজ্ঞাপন

জি ভয়েস ডেস্ক: একদিকে মৃত্যুর মিছিল, অন্যদিকে হতে যাচ্ছিলো সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সেই সাথে ঢাকা থেকেও লকডাউন ডিঙ্গিয়ে প্রচারণায় অংশ নিতে সিলেটে আসেন দলীয় নেতারা। জনসমাগম করেই হয় জনসভা। নির্বাচন কমিশন থেকেও সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিলো। এমন অবস্থায় এসে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করলেন হাইকোর্ট।

ভোটগ্রহণ স্থগিত করে আদালত বলেছেন, ‘যেহেতু সরকার ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ দিয়েছে, আমরা আপাতত ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেখি। তারপর পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

সোমবার (২৬ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সোমবার (২৬ জুলাই) ছয় আইনজীবী এবং সালেহ আহমদসহ ৭ জন ভোটার মোট ১৩ জন পিটিশনারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ স্থগিত চেয়ে রিট দায়ের করেন। রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ স্থগিত চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয় সংশ্লিষ্টদের প্রতি। রোববার (২৫ জুলাই) ই-মেইলের মাধ্যমে পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির নোটিশটি পাঠান।

যে পাঁচ আইনজীবীর পক্ষ থেকে রিটটি করা হয়েছে তারা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আল-রেজা মো. আমির, অ্যাডভোকেট মো. জোবায়দুর রহমান, অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মুস্তাফিজুর রহমান।

রিটে বলা হয়, ‘২০২১ সালের ১১ মার্চ সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে সিলেট-৩ আসনটি শূন্য হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৫ মার্চ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১১ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২৯ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ১২৩-এর দফা ৪ অনুযায়ী উক্ত শূন্যপদ পূরণে ৮ জুন ২০২১ তারিখের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রহিয়াছে।’

‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ১২৩-এর দফা ৪-এর শর্তানুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত দৈব দুর্বিপাকের কারণে নির্ধারিত মেয়াদ অর্থাৎ শূন্য হইবার নব্বই দিনের মধ্যে উল্লিখিত শূন্য আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না। এমতাবস্থায় সিলেট-৩ শূন্য আসনের নির্বাচন নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে অনুষ্ঠান সম্ভব না হওয়ায় পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে। তাই গত ২ জুন নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ১৪ জুলাই ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করে। তবে গত ১৫ জুন নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণের তারিখ পরিবর্তন করে ২৮ জুলাই নির্ধারণ করে।’

রিটে আরও বলা হয়, ‘সংবিধানের ১২৩-এর দফা ৪-এর শর্তানুসারে সিলেট উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত। তাই ২৮ জুলাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন স্থগিত করা যাবে না- এমন বক্তব্য আইনের সঠিক ব্যাখ্যা নয়। এক্ষেত্রে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই।’

‘তাই নির্বাচন কমিশনের উচিত চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় এবং লকডাউনের সময়ে নির্বাচন আয়োজন না করে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্য যেকোনো সময় ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা। কারণ এই সময়ে তিন লাখ ৫২ হাজার ভোটারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের বর্তমান লকডাউন নীতির বিরোধী। তাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির বিবেচনায় আগামী ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য সিলেট-৩ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার জন্য উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হলাম।’

এর আগে শনিবার (২৪ জুলাই) সিলেট জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে উপনির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা-বিষয়ক সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন আর পেছানোর সুযোগ নেই।’

ভোটারদের মাস্ক পরে ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই উপনির্বাচনের সব কার্যক্রম লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।’
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ