Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-10-09T08:28:05Z
কোম্পানীগঞ্জলিড নিউজ

১৬ বছরেও সংস্কার হয়নি সিলেটের ভোলাগঞ্জ-শাহ আরফিন সড়ক

বিজ্ঞাপন

প্রতিনিধি, কোম্পানীগঞ্জ : বিশ বছর আগে (২০০১-০২) অর্থ বছরে নির্মাণ করা হয়েছিল। সর্বশেষ সংস্কার হয়েছিল ১৬ বছর আগে (২০০৪-০৫) অর্থ বছরে। তারপর থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও রাস্তাটি সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন। এমন বেহাল অবস্থা সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের ভোলাগঞ্জ-শাহ আরফিন-ছনবাড়ী সড়কের। দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ ৫.৪৭ কিলোমিটার সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের কষ্টের শেষ নেই।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এই সড়কের মাঝে মাঝে বড় বড় গর্ত। কোনো কোনো গর্তে বৃষ্টির পানিতে ছোট পুকুরের মতো আকার ধারণ করে আছে। এর মধ্যে গাড়ি চলে হেলেদুলে। শুকনো মৌসুমেও এসব গর্তে প্রতিনিয়ত আটকে পড়ে গাড়ি। রাস্তাজুড়ে খানাখন্দ। বড় বড় গর্ত এখন ছোটখাটো জলাশয়ে রূপ নিয়েছে। এসব গর্তে জমে থাকে পানি। ফলে কাদা-পানিতে একাকার সড়কে চলতে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। যাত্রীবাহী যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। স্থানে স্থানে বড় বড় গর্তে গাড়ি চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। এ পথে কেউ একবার গেলে দ্বিতীয়বার যাওয়ার কথা কল্পনায়ও আনবে না কারো। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে হাজার হাজার মানুষ।

শাহ আরফিন টিলা থেকে পাথরবহনকারী ট্রাক ও ট্রাক্টর চলার কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির কার্পেটিং উঠে গেছে কয়েক বছর আগেই। কোথাও কোথাও পাথর-বালুর আস্তরণ পর্যন্ত নেই। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। আবার কোথাও কোথাও রাস্তার অস্তিত্ব মালুম হওয়াই দায় হয়ে পড়েছে। রাস্তায় কিছু দূর পরপর বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে রাস্তার মাঝে। সেখানে রাস্তার মাঝে আক্ষরিক অর্থেই ‘ছোট পুকুর’ তৈরি হয়েছে। ‘ছোট পুকুর’-এর পাড় দিয়ে লোকজনকে সাবধানে পা ফেলে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এসবের মধ্যে দিয়েই প্রাণ হাতে করে চলছে নিত্যযাত্রীদের যাতায়াত।

উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রস্তমপুর, পাড়ুয়া নোয়াগাঁও, বাবুল নগর, নারায়নপুর, চিকাডহর, বাহাদুরপুর, জালিয়ারপাড়, শাহ আরফিন বাজার, ছনবাড়ী ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সীমান্ত পথে যাতায়াতকারীসহ বিশ হাজারের অধিক মানুষ রাস্তার বেহাল দশার জন্য ভোগান্তিতে রয়েছে। তাঁরা দ্রুত ওই রাস্তার সংস্কারের দাবি জানাচ্ছেন।

স্থানীয় মুরব্বি আইয়ুব আলী জানিয়েছেন, যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় মানুষের অসুখ-বিসুখ হলে চিকিৎসা নিতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে হলেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে যায়।

স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী রাসেল গাজী বলেন, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মানুষ চরম কষ্ট নিয়ে যাত্রায়ত করে। সাধারণ মানুষের কষ্ট দেখার কেউ নেই। যার ফলে ১৬ বছরেও সংস্কার হয়নি এই সড়কটি।

এই রাস্তার নিত্যযাত্রী ছাতক উপজেলার নিজগাঁও গ্রামের শিক্ষার্থী সঞ্জিত শর্মা বলেন, পড়াশোনা করতে এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করি। অল্প বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কোনো গাড়ি চলা তো দূরে থাক হেঁটে যাওয়াই কঠিন হয়ে যায়। জানিনা ঠিক কতদিন আমাদের এ ভোগান্তি সহ্য করতে হবে।

শাহ আরফিন বাজারের ব্যবসায়ী হেকিম মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের প্রকল্প গ্রামাঞ্চলে রাস্তা পাকাকরণ হলেও এই রাস্তা আজও পাকাকরণ করা হয়নি। সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে আজও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। পিচের রাস্তা ভেঙে পুকুর তৈরি হয়েছে। যাতায়াত দুষ্কর বিধায় পিছিয়ে পরছে এলাকার জীবন মান উন্নয়ন। কেউ অসুস্থ হলে বা কারও প্রসবের ব্যথা উঠলে যথা সময়ে ক্লিনিক বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।

এ ব্যাপারে ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, এই রাস্তাটি আমার ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। রাস্তাটির আরসিসি ঢালাইসহ পুনর্নির্মাণের জন্য এলজিইডি বরাবরে আবেদন করেছি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী মহোদয়ও এ ব্যাপারে অবগত রয়েছে। আশাকরি, খুব দ্রুত রাস্তাটির পুনর্নির্মাণ করা হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলম দীর্ঘদিন সংস্থার না হওয়া এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা স্বীকার করে জানান, রাস্তাটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ০০-২.২১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত পুনর্নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন করে পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলে পুনর্নির্মাণ করা হবে এবং বাকি অংশ পরবর্তীতে সংস্কার করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য বলেন, রাস্তাটি পুনর্নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, অনুমোদন হলেই দ্রুত কাজ করা হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী ইনামুল কবীর জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কের বেহাল অবস্থা বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ টু শাহ আরফিন সড়কের কাজ দ্রুতই করা হবে।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ