Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-03-10T15:31:23Z
লিড নিউজসিলেট

অবহেলায় কমছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের উৎপাদন

বিজ্ঞাপন

জি ভয়েস ডেস্ক: রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) উৎপাদন সক্ষমতা ছিল দিনে প্রায় ১৫ কোটি ঘনফুট। উৎপাদন কমতে কমতে এটি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দিনে উৎপাদন হচ্ছে গড়ে সাড়ে আট কোটি ঘনফুট।

শুধু সিলেট গ্যাস ফিল্ড নয়, রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটি গ্যাস উৎপাদন কোম্পানির মধ্যে দুটিতেই উৎপাদন কমেছে। এই পরিস্থিতির জন্য মূলত নতুন গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনের দিকে সরকারের অবহেলাকে দায়ী করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। 

তাঁরা বলছেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর চেয়ে সরকারের মনোযোগ আমদানির দিকে।বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) বলছে, দেশে একসময় দিনে ৩০০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস উৎপাদিত হয়েছে। বর্তমানে উৎপাদিত হচ্ছে ২৩০ কোটি ঘনফুটের কিছু বেশি। যদিও ২৭৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলার সক্ষমতা ছিল এক বছর আগেও। এখন উৎপাদন বাড়াতে সব গ্যাসক্ষেত্রেই প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।

দেশে এখন গ্যাস উৎপাদন করছে দুটি বহুজাতিক ও তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি। এর মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ড গ্যাস উৎপাদন করছে চারটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে। এ কোম্পানির অধীনে থাকা হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ আছে। অন্যতম সম্ভাবনাময় কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রের সাতটি কূপের মধ্যে বর্তমানে শুধু দুটি কূপ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। 

গ্যাসক্ষেত্রটির উৎপাদন সক্ষমতা ছিল দিনে প্রায় ৭ কোটি ঘনফুট, এখন তা কমে হয়েছে তিন কোটি ঘনফুটের কিছু বেশি।জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, দিনে ৫ কোটি ঘনফুট উৎপাদন বাড়াতে পারলে ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলারের গ্যাস আমদানি ঠেকানো সম্ভব। এতে বছরে দুই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা যায়।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডের অধীনে এ পর্যন্ত মোট ৩০টি কূপ খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টিতে গ্যাস পাওয়া যায়নি। ১২টি থেকে বর্তমানে উৎপাদিত হচ্ছে। আর ১২টি ধাপে ধাপে বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোনো কোনো কূপে উৎপাদন শেষ হয়ে গেছে, আবার কোনোটিতে কারিগরি জটিলতায় উৎপাদন বন্ধ। এর মধ্যে কৈলাসটিলায় দুটি কূপ থেকে পানি আসায় উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে এক বছর আগে।

বিইআরসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, কোনো কূপ থেকে পানি উঠতেই পারে। তাই বলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া দীর্ঘদিন সেটি বন্ধ রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কূপে গ্যাসের অস্তিত্ব বোঝার জন্য সহজ পরীক্ষা আছে, যা ওয়্যার লাইন লগিং নামে পরিচিত। এটি করে এক সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল জানা যায়। তাহলে কেন এটি করতে বছর পার করে দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গ্যাসের উৎপাদন ধীরে ধীরে কমতে থাকবে, এটা স্বাভাবিক। তবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নকাজ চালিয়ে গেলে উৎপাদন ধরে রাখা যায়। প্রক্রিয়াগত কারণেই প্রকল্প অনুমোদনে একটু সময় লেগে যায়। এখন দ্রুত কূপ খননে সরকারি নির্দেশনা আছে। উৎপাদন বাড়াতে একাধিক প্রকল্পের কাজ চলছে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ড সূত্রে জানা গেছে, কৈলাসটিলায় ৭ নম্বর কূপে কাজ শুরু হয়েছে জানুয়ারির মাঝামাঝি। এখানে গ্যাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়েছে। শিগগিরই উৎপাদনের পরিমাণ জানা যাবে। এপ্রিল থেকে উৎপাদন শুরু হতে পারে।সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, গ্যাসের উৎপাদন ধরে রাখা বা কমে গেলে তা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলার ব্যবস্থাপনায় বড় ঘাটতি রয়েছে। গ্যাসের মজুত ব্যবস্থাপনার বিষয়টি তাদের কার্যক্রমে অনুপস্থিত বলা যায়। এ কারণে এক-দেড় বছর ধরে উৎপাদন কমে যাচ্ছে কিন্তু সেদিকে তাদের নজর নেই।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ