Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-08-05T16:31:11Z
মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারে শতকোটি টাকার সেতুতে উঠতে লাগে বাঁশের মই !

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : ভূমি অধিগ্রহণের ঝামেলায় ঝুলে রয়েছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শতকোটি টাকার রাজাপুরের সেতু। ২০১৮ সালের শেষের দিকে প্রায় শতকোটি টাকার এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে বছরখানেক আগে কাজ সম্পন্ন হলেও সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক এখনো হয়নি। ফলে লোকজন ঝুঁকি নিয়ে উঁচু সেতুর দুই পাশে বাঁশের মই ব্যবহার করে পারাপার হচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসীর স্বপ্নের সেতুটি রাস্তা থেকে বেশ উঁচুতে রয়েছে। এটির পশ্চিম পাশে প্রায় ৩০ ফুট এবং পূর্ব পাশে প্রায় ৫০ ফুট উঁচু বাঁশের মই দিয়ে ওঠানামার জন্যে ব্যবস্থা করা হয়েছে। মই বেয়ে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এই সেতুতে ওঠানামা করছেন। এতে যেকোনো সময় ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা যায়, কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর সড়কের ১৫তম কিলোমিটারে মনু নদী। নদীটি দ্বিখণ্ডিত করে রেখেছিল দক্ষিণ কুলাউড়া ও উত্তর কমলগঞ্জ উপজেলাকে। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর সড়ক প্রশস্তকরণসহ রাজাপুর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তন হলে তা বন্ধ হয়ে যায়।

পরে ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এর সভায় ৯৯ কোটি ১৭ লাখ ব্যয়ে রাজাপুর সেতু প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। ওই বছরের নভেম্বরে সেতুটির নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও বর্তমান বন ও পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি ও মৌলভীবাজার-২ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মতিন। অথচ সেতুর নির্মাণকাজ বছরখানেক আগে সম্পন্ন হলেও সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে লোকজন সেতু পারাপার হচ্ছেন।

জানা গেছে, জন্মভূমি-ওয়াহিদুজ্জামান-নির্মিতি নামের সিলেটের যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ পেয়ে ২০২১ সালের জুন মাসের দিকে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করে। পরে সেতুর দুই পাশে সাড়ে সাত কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে জামিল-ইকবাল নামের সিলেটের আরেকটি যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ পায়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে এ কাজ সম্পন্নেরও কথা ছিল। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। যার কারণে এখন কোটি টাকার সেতুর উপর যেতে হলে শত টাকার বাঁশের তৈরি সিঁড়ির প্রয়োজন পড়ছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, হাজীপুর ও শরীফপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের প্রতিদিন এই সেতু পার হয়ে পৃথিমপাশা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। হাজারো মানুষের স্বপ্নের সেতুর নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ না হওয়ায় উন্নয়নের পথ খুলছে না। দ্রুত এই সেতুর নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ করার জোর দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

সড়ক বিভাগ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার দায়িত্বে থাকা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ সরকার জানান, ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা। এটি সম্পূর্ণভাবে শেষ করতে আরও এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, ভূমি অধিগ্রহণের ফাইল মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদিত ফাইল পেলে দ্রুতই অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

সূত্র : দেশ রুপান্তর 

 
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ