বিজ্ঞাপন
জিভি২৪ ডেস্কঃ জগতের সাথে বেশ তাল মিলিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বহির্বিশ্বে বেশ প্রশংসা ও সাফল্য অর্জন করেছে দেশটি। কিন্তু এত কিছুর পরেও অনেক দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে সিলেট। আর তা হলো অন্ধ শিশু-কিশোরদের অধিকার নিশ্চিতকরণ। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে দেশের উন্নতির পেছনে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসবের খেয়াল না রাখার কারণেই রাস্তায় বের হলে দেখা যায় পিতৃ-মাতৃহীন নিঃসঙ্গ শত শত পথশিশু। তারা লেখাপড়ার সুযোগ এবং মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও বঞ্চিত রয়েছে। এমনকি অনেকের দুবেলা খাবারও জোটে না। অনেকে এসব অন্ধ শিশু-কিশোরদের সহায়তা করার আশ^াস দিয়ে ভিক্ষা করান। সিলেটের বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও মাজারের সামনে গেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। আর এমন দুরবস্থা থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে এক চৌধুরী পরিবারের অর্থায়নে গোলাপগঞ্জে নির্মিত হচ্ছে অন্ধ ও এতিমখানা স্বপ্নের মাদ্রাসা। এটি হচ্ছে সিলেটের জন্য প্রথম। পিতৃ-মাতৃহীন নিঃসঙ্গ শিশুদের শেষ ঠিকানা হবে এই অন্ধ ‘এতিমখানা’ মাদ্রাসায়। সেটি চালু হওয়ার পর অন্ধ শিশু-কিশোররা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারবে। মাদ্রাসাটি হবে তাদের জন্য এক স্বপ্নের ঠিকানা। অন্ধ শিশুদের কুরআন পাঠের জন্য শিক্ষার্থীদের স্পর্শকরণ ও শ্রবণ সুবিধাযুক্ত “ব্রেইল” ডিজিটাল কুরআন শরীফ থাকবে। এসব কুরআন শরীফ বিদেশ থেকে আনা হবে। মাদ্রাসার নাম দেওয়া হয়েছে-সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বীন মাকতুম (রা.) অন্ধ মাদ্রাসা ও এতিমখানা। এটি চালু হলে পিতৃ-মাতৃহীন নিঃসঙ্গ অসহায় শিশুরা শিক্ষার আলোর মুখ দেখতে পারবে। দেশে অধিকাংশ এতিমশিশুরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ফলে এসব শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সামাজিক সংগঠক রায়হান তালুকদার বলেন, সিলেটে বেশিরভাগ এতিম শিশুরা অসহায় জীবন যাপন করছে। অনেকে তাদেরকে পুঁজি করে পথে পথে ভিক্ষা করছে। এমন একটি উদ্যোগ সিলেটের অসহায় অন্ধ শিশুদের জন্য অনেক আনন্দের। এমন উদ্যোগ অনেককে উৎসাহিত করবে। এটি প্রতিষ্ঠা করছেন গোলাপগঞ্জ পৌরসভার রণকেলী গ্রামের মৃত আব্দুল লতিব চৌধুরী (প্রয়াত সামরিক কর্মকর্তার) জ্যেষ্ঠ কন্যা আয়শা খানম চৌধুরী। তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি ১৭৪ শতক জায়গার মধ্যে ৪ শতক জায়গায় বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে অন্ধ ও এতিমখানা মাদ্রাসার কাজ শুরু করেছেন। মাদ্রাসার কাজ শেষ হওয়ার পথে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী এ উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, পিতৃ-মাতৃহীন নিঃসঙ্গ শিশুদের পাশে থাকা আমাদের সকলের দায়িত্ব। তারা সমাজের সবচেয়ে অসহায়। এ ব্যাপারে প্রয়াত লতিব চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ কন্যা আয়শা খানম চৌধুরীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল অন্ধ ও এতিমখানা একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা। তাই পরিবারের সকল সদস্যের সম্মতিতে এই কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, খুব শীঘ্রই মাদ্রাসা চালু করতে পারব। তিনি বলেন, আমরা প্রথমে ২০ জন অন্ধ শিশু নেব। তাদের পড়ালেখা ও থাকা খাওয়ার সকল খরচ বহন করবে আমাদের পরিবার। তাদের পাঠদানের জন্য প্রথমে দুজন শিক্ষক রাখা হবে। মাদ্রাসাটি কওমির সকল নিয়মকানুনের মাধ্যমে চলবে। আশা করছি, এটি হবে দেশের মানসম্পন্ন একটি অন্ধ ও এতিমখানা স্বপ্নের মাদ্রাসা। মাদ্রাসার নির্মাণ কাজের তদারকি করছেন আমার ছোট ভাই ক্যাপ্টেন রুকনুজ্জামান চৌধুরী।