বিজ্ঞাপন
ফাহিম আহমদ : একটা সময় ছিল যখন করোনা নাম শুনলে আতঙ্কে বুক কাঁপতো গোলাপগঞ্জবাসীর। যে দিন সিলেট জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়, সে দিন সিলেটের সবকটি উপজেলায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। না জানি মহাবিপদ সবার দিকে এগিয়ে আসছে। কখন জানি আমাকে এসে ঝাঁপটে ধরে ফেলবে। সে চিন্তায় সবাই বিভোর। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে দেশ, সিলেটসহ প্রতিটি উপজেলায় করোনা রোগী বাড়ছে। বাড়ছে সুস্থতা, আর মৃত্যুও।
উপজেলায় গত (২ মে) সকালে রমজান মাস। যখন সবাই ইবাদত-বন্দেগী করে ঘুমে। ঠিক তখনই উপজেলার সংবাকর্মীদের কাছে এসে পৌঁছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেওয়া প্রথম করোনা রোগীর তথ্য। সংবাদকর্মীরা পোস্ট, নিউজ করলেন উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দত্তরাইল গ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত। সবাই যখন ঘুম থেকে উঠলেন, জানলেন, ঠিক তখনই যেন আকাশ মাঠিতে ভেঙে পড়লো৷ সবাই চিন্তায় অস্থির। আতঙ্কে বুক কাঁপছে। হাত-পা চলছে না।
উপজেলার প্রতিটি মানুষ তখন ভয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। উপজেলায় বাড়িয়ে দেওয়া হলো কঠোর নিরাপত্তা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। যারা বাড়ির বাইরে জরুরি কাজে বের হয়েছিলেন সবার মুখে মাস্ক, হ্যান্ডস গ্লাভস, পকেটে হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
এদিকে করোনা সারাদেশ, সিলেট জেলাসহ প্রতিটি উপজেলার মত গোলাপগঞ্জেও বাড়তে শুরু করেছে ঠিক তখনই উপজেলার মানুষের মধ্যে থেকে উধাও হয়ে গেছে করোনা ভাইরাস নামে আতঙ্কের নাম। এখন আর কেও করোনা নাম শুনলে আতকে উঠেন না। ভয়ে বুক কাঁপে না। বাইরে বের হলে মুখে মাস্ক, হ্যান্ডস গ্লাভস, পকেটে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দেখা মিলে না। আর সামাজিক দূরত্বের তো বালাই নেই।
প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট, শপিং মল, মাছ বাজার, তরকারি বাজার সবকিছু ঠিক আগের মত। কোন দোকানের সামনে, ভিতরে নেই সামাজিক দূরত্ব রেখা। দোকানে নেই করোনা প্রতিরোধক কোন সুরক্ষা সামগ্রীও। নিয়মের বাইরে গিয়ে তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি। দোকানপাট নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বেঁধে দেওয়া হলেও সেটাও মানছেন না কেউ। এ ব্যাপারে প্রশাসনেরও কোন নজরদারি নেই। করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাড়ি করা হচ্ছে না লকডাউন। অভিযোগ রয়েছে, করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়ির লোকজন এমনকি করোনা আক্রান্ত রোগীও দিব্যি বাড়ির বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে একে একে উপজেলায় এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ১৬৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯০ জন ও মৃত্যুবরণ করেছেন ৮ জন।
করোনা আক্রান্ত এক রোগীর বাড়ির লোক তিনি বলেন, আমার ভাবির কোন করোনা রোগ হয় নি। তিনি স্বাভাবিক আছেন। তার রিপোর্ট ভুল এসেছে। এভাবে ভুল বলে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাস অনেক কঠিন একটি রোগ। যা এখন যে কারও হতে পারে। এ থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধিসহ সব ধরণের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।