ফাহিম আহমদ, গোলাপগঞ্জ:: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দীর্ঘ দিন দেশ জুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান-পাট ও ফার্মেসি ছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি সব ধরণের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।
এদিকে কয়েকদিন যাবত থেকে এসব কিছু দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্য বিধি মেনে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে। সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক সভা, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সব ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠানে গণজমায়েত কমাতে বন্ধ করে দেয়া হয় এসব কিছু। আর এতে বেশি বিপাকে পড়েছেন দেশের সকল ডেকোরেটর মালিক-কর্মচারীরা।
ঠিক একই রকম অবস্থা গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৩ শতাধিক মালিক-কর্মচারীর। দীর্ঘ দিন কোন অনুষ্ঠান না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে আয়। আর এতে বিপাকে পড়েছেন এসব মানুষ। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলার পৌর সদর, ভাদেশ্বর, ঢাকাদক্ষিণ, হেতিমগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা যায়, ডেকোরেটর দোকানের মালিক-কর্মচারীরা কাজ না থাকায় কতটা বিপাকে আছেন।
অনেক দোকানের কর্মচারীর পরিবারের একমাত্র ভরসা ছিল এই সব দোকান। দোকানের মালিকরা দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীর বেতন দিতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছেন। আর এতে করে অনেক দোকানের কর্মচারীর চাকরি চলে যাওয়ায় নিদারুণ কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে তাদের। অনেক দোকানের মালিকের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করতে পারায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অনেক মালিক ব্যবসা বাদ দেওয়ার পায়তারা করছেন।
এদিকে উপজেলার সকল ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছেন তাদের ব্যবসা সচল করার জন্য, স্বল্প সুদে তাদেরকে ঋণ দেওয়ার জন্য৷ সীমিত পরিসরে সামাজিক অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়ার জন্য।
জানা যায়, গত (২৬ জুলাই) রোববার উপজেলার সকল মালিক-কর্মচারী মিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র বরাবর সরকারি ভাবে অনুদান ও ঋণ ব্যবস্হা করে দেওয়ার জন্য একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন।
ডেকোরেটর কারিগর সাব উদ্দিন সাবু বলেন, কাজ নাই। আয় নাই। চাকরি চলে যেতে পারে যে কোন মূহুর্তে। দীর্ঘ দিন থেকে পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।
পৌর সদরের ফাল্গুনী লাইটিং এর পরিচালক এ এস মিলন মাহমুদ বলেন, করোনা কালটা আমাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুষ্ঠান না থাকার কারণে ব্যবসায় ধস নেমে এসেছে। এরকম চললে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হতে হবে৷ আগামীতে পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া কোন উপায় দেখতেছি না।
কদমতলী তান্নি জেনারেটর এন্ড লাইটিং সেন্টারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম সরকারের কাছে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের অনুমিত প্রদানের জন্য অনুরোধ জানান। সবদিক বিবেচনা করে সহজ শর্তে, সহজ কিস্তিতে এবং নামমাত্র সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ প্রদান করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, ব্যবসায়ীরা তাদেরকে অনুদান প্রদান করার জন্য স্মারক লিপি দিয়েছেন। তাদের জন্য আলাদা কোন প্রণোদনার ব্যবস্হা নেই। যদি সরকার থেকে তাদের জন্য প্রণোদনা আসে তাদেরকে দেওয়া হবে।