Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০
সর্বশেষ সংষ্করণ 2020-12-05T16:47:28Z
গোলাপগঞ্জসিলেট

ভোগান্তির বাইপাস-হিলালপুর রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু

বিজ্ঞাপন

ফাহিম আহমদ : দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অনবরত মিথ্যা আশ্বাস বাস্তবে রূপ নিচ্ছে এবার। সিলেট-জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার সড়কের বাইপাস-হিলালপুর নামক প্রায় দুই কিলোমিটার এবড়ো-থেবড়ো সড়কের সংস্কার কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অজানা কারণে কাজ না হওয়ায় ছোট-বড় গর্তে ভরপুর হয়ে উঠেছিল জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি। গতকাল শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রাত থেকে হিলালপুর অংশ থেকে এস্কেভেটর দিয়ে গর্ত করে পুরাতন বালু, পাথর, ইট, কংক্রিট সরিয়ে রাস্তার পাশে রাখা হচ্ছে। এরপর রোলার দিয়ে সমান করা হচ্ছে সেই জায়গা। শুরু হওয়া রাস্তার কাজ ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে জানা গেছে।

পূর্ব সিলেটের ৫টি উপজেলার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে এ সড়ক। সড়কটি সংস্কার শুরু হয়েছে দেখে সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী ও বিভিন্ন সময় এ সড়কের জন্য আন্দোলন করা স্থানীয় ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে একধরণের আনন্দ বিরাজ করছে।

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সুতারকান্দি (শেওলা) স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানির একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এ সড়ক। দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে অজানা কারণে সংস্কার হয়নি সড়কটি। যার দরুণ মাত্র দুই কিলোমিটার সড়কের জন্য মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। শীতকালে ধুলা-বালি হয়ে উঠেছিল যাত্রীদের জন্য আরও বড় দুর্ভোগের কারণ। বিশেষ করে মোটরসাইকেলচালক ও যাত্রীদের ভালো কাপড় ধুলোয় নষ্ট হয়ে যেত। চোখে-মুখ ধুলো ঢুকে যেত। ছোট-বড় গর্তের কারণে হেলেদুলে চলত যানবাহন। বিশেষ করে যদি গর্তের মধ্যে কোনো গাড়ি আটকে যেত তাহলে সড়কের দুইপাশে গাড়ির দীর্ঘ যানজট শুরু হতো। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারণে গাড়ি চলাচলের সময় ধুলোবালিতে মানুষের দম বন্ধ হয়ে যেত। সড়কের গর্তে যানবাহন পড়ে প্রায় প্রতিদিন ঘটেছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সাধারণ মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয়।

প্রয়োজনের তাগিদে একদিকে সিলেট শহর থেকে এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় যেতে হয় বিভিন্ন পেশার মানুষকে, অপরদিকে বিভিন্ন উপজেলার পেশাজীবীদের আসতে হয় সিলেট শহরে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যানবাহন ও লাখো মানুষকে প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। ছোট-খাটো দুর্ঘটনা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিলেও বড় ধরণের কোনো রোগের চিকিৎসার জন্য আসতে হয় সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে। বিশেষ করে ইমার্জেন্সি রোগীদের জন্য সড়কটি বিপদের কারণ হয়ে উঠেছে। স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণকে চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আজ শনিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বাইপাস-হিলালপুর সড়কে গিয়ে দেখা যায়, হিলালপুর অংশ থেকে এস্কেভেটর দিয়ে পুরোনো রাস্তার সবকিছু সরিয়ে পাশে রাখা হচ্ছে। এক অংশের প্রায় ৫০ ফুটের মতো জায়গা থেকে মাটি, বালু, ইট সরিয়ে রোলার দিয়ে সমান করা হয়েছে। দিনের বেলা হওয়ায় গাড়ি চলাচলে সুবিধার জন্য কাজ বন্ধ রয়েছে। রাতের বেলা আবারও শুরু হবে কাজ।

বেশ কয়েকজন গাড়িচালক, যাত্রী, স্থানীয় বাসিন্দা ও কয়েকজন জনপ্রতিনিধি যারা সবসময় সড়কটি সংস্কারের জন্য আন্দোলন করেছেন তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা আনন্দ প্রকাশ করেন। কানাইঘাট থেকে অটোরিকশা নিয়ে সিলেতে যাওয়া এক চালক বলেন, ‘আমরা অনেক খুশি হয়েছি কাজ শুরু হয়েছে দেখে। এজন্য ধন্যবাদ জানাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।’

গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারী বাজারের মোটরসাইকেল চালক সুহেল আহমদ বলেন, ‘খুব বেশি গর্ত হয়েছে সড়কে। একটুও ভালো জায়গা নেই। ধুলো এমনভাবে রয়েছে যে নাক-মুখ বন্ধ হয়ে যায়।’

হিলালপুর গ্রামের বাসিন্দা জাবেদ আহমদ বলেন, ‘কত আন্দোলন করেছি সড়কটির জন্য। হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। অবশেষে এ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

গোলাপগঞ্জ যাত্রীকল্যাণ পরিষদের আহ্বায়ক সুজন খান বলেন, ‘আন্দোলন বুঝি বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। প্রায় ১৫ বছর থেকে অজানা কারণে সড়কটি সংস্কার হয়নি। দিন দিন ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছিল। এবার সড়কটি সংস্কার হচ্ছে শুনে কষ্টটা খুশিতে পরিণত হয়েছে।’

এ সড়কের কাজের ব্যাপারে কথা বলতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়াকে একাধিকবার মোবাইলে কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ