Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-03-11T08:49:48Z
গোলাপগঞ্জলিড নিউজ

গোলাপগঞ্জে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন, চাহিদা মেটাতে পারে ভোজ্য তেলের

বিজ্ঞাপন

দেলোয়ার হোসেন মাহমুদ : সূর্যমুখী চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার বর্গা চাষী ছেরাগ আলী। সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে এখন বিরাজ করছে রাজ্যে জয়ের আনন্দের হাসি। শুধু ছেরাগ আলী নয় এরকম সূর্যমুখীর চাষ করেছেন উপজেলার আরও অনেক কৃষকরা।     

সূর্যমুখী ফুল চাষে আশার আলো দেখছেন কৃষক। গাছে গাছে ফুটেছে ফুল। সৌরভ ছড়াচ্ছে চারিদিকে  পুরো জমি হলুদে ফুলে সুশোভিত। মৌমাছি আর প্রজাপতি অভয়ারণ্য। বাগানগুলো সড়কের পাশে হওয়ায় দূর থেকে তাকালে যে কারও মনে হতে পারে আকৃষ্ট। প্রকৃতি যেন হলুদ গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে, যেখানে সাময়িক সময়ের জন্য হারিয়ে যেতে মন চায়। বিস্তৃত সূর্যমুখী বাগানের এই হলুদাভ দৃশ্যটি যে কারও মনকে আকৃষ্ট করে তুলে, যা পর্যটকদের কাছে টানছে এক অমোঘ আকর্ষণে। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘুরতে আসছেন পর্যটকেরা৷ সুন্দর দৃশ্যবলী সাথে হচ্ছেন ক্যামেরাবন্দি। 

গোলাপগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রথম বারের মত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। অনাবাদি জমিতে পরিক্ষা মুলক ভাবে এই চাষ শুরু  হয়। তাই এ সকল জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন।   

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৫০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে প্যাসিফিক হাইসিন - ৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রায় ৩ শতাধিক  কৃষকদের বিনা মূল্যে ১ কেজি বীজ ও ১০ কেজি করে সার দেওয়া হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ করে সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকদের ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভবনা রয়েছে। আমরা সেই লক্ষেই তাদের উৎসাহিত করছি।   

বর্গা চাষী ছেরাগ আলী জিভয়েস২৪ কে জানান, তিনি আট বিঘা জমিতে হাইসি-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।প্রথমে তিনি এই ফসলটি নিয়ে সন্দিহান হন,এর আগে এই এলাকায় এই ফসলটি চাষ হয়নি গোলাপগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ভয়ে ভয়ে চাষ শুরু করেন। এখন আমি ফলন দেখে আমি অনেক খুশি ইতোমধ্যে প্রতিটি গাছে ফুল এসেছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন বিকালে শহরসহ আশপাশ এলাকা থেকে সৌন্দর্য পিপাসুরা দল বেঁধে ছুটে আসেন সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে। কিন্তু দর্শনার্থীরা ফুল ছিড়ে ফেলেন তাই আমি রাত দিন আমার সন্তানদের নিয়ে পাহারা দিতে হয়। তিনি আশা করেন সূর্যমুখী চাষে সফলতা আসবে।এবং আমি মনে করি অনাবাদি জমিতে অন্যান্য কৃষকরা সূর্য মুখী চাষ করবেন,তিনি বলেন একটি সমস্যা আমার রয়েছে গাছ গুলোতে সময়মত সেচ প্রদান করা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ  উপজেলা কৃষি অফিসার আনিসুজ্জামানের অনুপস্থিতিতে সহকারী কৃষি অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষে এ বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক এলাকাতে ধারাবাহিক ভাবে সূর্যমূখী চাষের উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী আমরা মাঠে কাজ করছি। 

তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে যে সয়াবিন তেল পাওয়া যায় তাতে কোনো ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই। বাজার থেকে যে সাধারণ সয়াবিন তেল কিনি তাতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কৃষকদের স্বাবলম্বী করতে সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, সূর্যমুখী তেলে আছে মানবদেহের জন্য উপকারী ওমেগা ৯ ও ওমেগা ৬, আছে অলিক অ্যাসিড। সূর্যমুখীর তেল শতকরা ১০০ ভাগ উপকারী ফ্যাটযুক্ত। এর তেলে আছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও পানি। ভিটামিন ই ও ‘ভিটামিন কে’ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেলযুক্ত। হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের রোগী, উচ্চ রক্তচাপের রোগী, কিডনি রোগীর জন্যও সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ