Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-12-10T17:18:52Z
সিলেট

নগর এক্সপ্রেসের বাসে আড়াল সিলেটের ঐতিহ্য

বিজ্ঞাপন
‘নগর এক্সপ্রেস’–এর বাস রেখে ঢেকে ফেলা হয়েছে আলী আমজাদের ঘড়ি। ছবি : প্রথম আলো।

ডেস্ক রিপোর্ট : মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়ন থেকে সিলেটে বেড়াতে এসেছিলেন সালাউদ্দিন আল মামুন ও রাশেদা আক্তার দম্পতি। গত বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরেছেন তাঁরা। শুক্রবার বিকেলে কিনব্রিজ এলাকায় গিয়েছিলেন। কিনব্রিজের ডান পাশে চাঁদনীঘাটে অবস্থিত ঊনবিংশ শতকের স্থাপনা আলী আমজদের ঘড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন এ দম্পতি। কিন্তু ছবিতে ঘড়ির ওপরের অংশ দেখা গেলেও নিচের অংশ ঢেকে ছিল সামনেসহ আশপাশে রাখা ‘নগর এক্সপ্রেস’-এর অনেকগুলো বাস।

সালাউদ্দিন আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলী আমজদের ঘড়ির কথা অনেক শুনেছি। এ ঘড়ি ও কিনব্রিজ সিলেটের ঐতিহ্য। সিলেটে বেড়াতে এসেছি, এ দুটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইচ্ছা পূরণ হয়নি। বাস রাখার কারণে ঘড়িটি আড়ালে পড়ে গেছে। এটি আসলে দুঃখজনক।’

শুক্রবার বিকেলে কিনব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কিনব্রিজের ডান পাশে সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাস। এর পাশেই আলী আমজদের ঘড়ি। ঘড়ির চারপাশ ঘিরে রাখা হয়েছে আরও কয়েকটি বাস। বাসগুলো ‘নগর এক্সপ্রেস’-এর। বাসগুলোর কারণে অনেকটা আড়ালে চলে গেছে আলী আমজদের ঘড়িটি।

নগরের তোপখানা এলাকার বাসিন্দা বিধান রায় বলেন, কিছুদিন আগপর্যন্ত সুরমা নদীর পাশের ‘ওয়াকওয়ে’ ঘেঁষে সিটি করপোরেশনের যানবাহনসহ নগর এক্সপ্রেসের বাসগুলোও রাখা হতো। এখন সিটি করপোরেশন তাদের অধিকাংশ যানবাহন সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু বাসগুলো এখনো সরিয়ে নেওয়া হয়নি। এখন কিনব্রিজ এলাকা নগর এক্সপ্রেসের স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। এ এলাকার ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়িটি আড়ালে পড়ে গেছে বাসগুলোর কারণে। এটি আসলেই সিলেটের বাসিন্দা হিসেবে কাম্য নয়।

সিটি করপোরেশনের একাধিক সূত্র জানায়, সিলেট নগর ও শহরতলি এলাকার পরিবহনসংকট দূর করতে গণপরিবহন হিসেবে ২০১৯ সালে চালু হয় ‘নগর এক্সপ্রেস’। সিলেট সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ও সিটি বাস মালিক গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালিত এ পরিষেবা দিয়ে নগরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। তবে বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে সেটি হয়নি।

সিটি এক্সপ্রেস চালুর পর থেকে বাসগুলো কিনব্রিজ এলাকাকে ঘিরে রাখত। প্রথম দিকে ব্রিজের এক পাশে রাখা হলেও এখন রাখা হচ্ছে যত্রতত্রভাবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের পরিবহন শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কিনব্রিজ এলাকাটি কিছুটা ফাঁকা থাকায় বাসগুলো রাখা হয়ে থাকতে পারে। ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি আড়াল করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি দেখবেন।

সিটি বাস মালিক গ্রুপ আহ্বায়ক ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নগর এক্সপ্রেস বাসগুলো সিলেট কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে বাসগুলো রাখার জন্য ছাউনি নির্মাণ করার কথাও জানিয়েছেন মেয়র। কিন্তু এখন পর্যন্ত ছাউনি নির্মাণ না হওয়ায় বাসগুলো স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। এতে অনেকটা বাধ্য হয়ে কিনব্রিজ এলাকাসহ আশপাশে এবং নগরের সাগরদিঘীর পাড় এলাকার বর্ণমালা বিদ্যালয়ের মাঠে বাসগুলো রাখা হচ্ছে।

আলী আমজদের ঘড়ি আড়াল করে বাসগুলো রাখার বিষয়ে মখলিছুর রহমান বলেন, ‘আমরাও বুঝি, এতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে অনেকটা অপারগ হয়ে সেখানে রাখতে হচ্ছে। বাসগুলো রাস্তায় রাখলে অনেক সময় ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাই, নির্ধারিত একটি স্থান সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ আমাদের দিক।’

সূত্র : প্রথম আলো 
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ