Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩
সর্বশেষ সংষ্করণ 2023-03-11T16:34:34Z
লিড নিউজসিলেট

সিলেটে শহীদ মিনার ব্যবহারে কোনো টাকা লাগবে না

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কোনো স্থাপনা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হবে না। এ ছাড়া শহীদ মিনার ব্যবহারে কোনো টাকাও (ফি) লাগবে না। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগর ভবনে শহীদ মিনার পরিচালনাবিষয়ক এক সভায় সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এসব তথ্য জানিয়েছেন। সভায় সিলেটের রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। সভা থেকে শহীদ মিনার পরিচালনার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে আটটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে সম্প্রতি খবর রটেছিল, শহীদ মিনার চত্বর ব্যবহার করতে হলে মার্চ মাস থেকে ফি গ্রহণের মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ জন্য শুধু সিটি করপোরেশন থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হয়। ফি দিতে হবে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুকে এ বিষয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট দেন। বাম গণতান্ত্রিক জোট, জাসদ, বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল। এ ছাড়া সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৩০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি বিবৃতি দিয়ে ‘সিটি করপোরেশনের দুরভিসন্ধিমূলক সিদ্ধান্ত রুখে দাঁড়ানো’র আহ্বানও জানিয়েছিলেন। তবে দীর্ঘদিনের প্রথা অনুযায়ী, শহীদ মিনারে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা অনুষ্ঠান করলেও কোনো ফি দিতে হয় না।

সিলেটের রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের বিশিষ্টজনদের নিয়ে শহীদ মিনার পরিচালনাবিষয়ক একটি সভা করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়রসিলেটের রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের বিশিষ্টজনদের নিয়ে শহীদ মিনার পরিচালনা বিষয়ক একটি সভা করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র।

সভায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আগের নিয়মেই পরিচালিত হবে। শহীদ মিনারে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ তথা ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক কার্যক্রম যেন নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষায় যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, পান্না লাল রায়, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, সিপিবি সিলেটের সাবেক সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য, রাজনীতিবিদ সিকান্দর আলী ও মো. আরিফ মিয়া, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আল আজাদ, সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শামসুল আলম সেলিম, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাদ্দেস বাবুল, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন প্রমুখ।

সভা থেকে নেওয়া আটটি সিদ্ধান্তের মধ্যে প্রথমেই আছে, শহীদ মিনার সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের সামগ্রিক দায়িত্ব সিলেট সিটি করপোরেশন পালন করবে। শহীদ মিনারের কর্মচারী নিয়োগ, বরখাস্ত, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান এবং শৃঙ্খলাসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে পরিচালিত হবে।

দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি হচ্ছে শহীদ মিনারে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ তথা ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক কার্যক্রম যেন নির্বিঘ্ন এবং যথোপযুক্তভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে, তা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কিংবা শহীদ মিনারের মৌল ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো সাম্প্রদায়িক কার্যক্রম যাতে সেখানে না হয়, সে বিষয়ে সিটি করপোরেশন সতর্ক ও যত্নবান থাকবে।

বইমেলা ছাড়া অন্য কোনো বাণিজ্যিক কার্যক্রম শহীদ মিনারে পরিচালনা করা যাবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া শহীদ মিনারে কোনো অনুষ্ঠান বা যেকোনো কার্যক্রম আয়োজনের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের পূর্বানুমতি নিতে হবে। তবে ধর্মভিত্তিক কোনো সংগঠনকে শহীদ মিনার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অন্য সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আছে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান স্বাধীনতা দিবস এবং মহান বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণসহ অপরাপর অনুষ্ঠানসমূহ সঞ্চালনা করবে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেট। এ ছাড়া শহীদ মিনার বাস্তবায়ন পরিষদ নেতৃবৃন্দের নামফলক বর্তমানে যেভাবে আছে, সেটা সেভাবেই সংরক্ষণ করা হবে। এখানে কোনো সংযোজন বা বিয়োজন করা যাবে না।

এ ছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের ক্ষেত্রে শহীদ মিনার বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদনের যে নিয়ম চলে আসছে, তা সভায় স্থগিত করা হয়েছে। তবে এখন থেকে বাস্তবায়ন পরিষদের নামে কোনো শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে না। শ্রদ্ধা নিবেদনের ক্ষেত্রে প্রথমে বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং পরে রাষ্ট্রের পদমর্যাদা ক্রম অনুসারে হবে। একইভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা ক্রম অনুসরণ করা হবে।


বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ