Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-12-13T11:07:09Z
হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জে পাহাড়ের বুকে অযত্নে পড়ে থাকা বধ্যভূমি

বিজ্ঞাপন
ছবি : ফয়জাবাদ বধ্যভূমি

ডেস্ক রিপোর্ট : হবিগঞ্জের বাহুবলের পাহাড় ঘেরা ফয়জাবাদ বধ্যভূমি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। বধ্যভূমির বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেলেও তা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। মাঝে মাঝে চা বাগান কর্তৃপক্ষ এখানে ঝোপঝাড় পরিস্কার করলেও এর রক্ষণাবেক্ষণে কেউ নেই।

তবে দিবস এলে কিছুটা পরিপাটি করা হলেও এরপর আর খবর রাখেনা কেউ।

বলা যায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত নির্জন পাহাড়ের বুকে অযত্নে পড়ে থাকা ফয়জাবাদ বধ্যভূমি একখণ্ড ইতিহাস। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের রক্তঝরা উত্তাল সময়ে পাক বাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল পার্শ্ববর্তী শ্রীমঙ্গলে। ক্যাম্পটির পরিচিত ছিলো টর্চারসেল হিসেবে।

পাক হানাদার বাহিনী স্থানীয় রাজাকার, আল-বদর ও শান্তি কমিটির সদস্যদের সহায়তায় বাহুবল ও আশপাশের এলাকার মুক্তিকামী নারী, পুরুষ ও শিশুদের ধরে ওই ক্যাম্পে নিয়ে যেতো। অত্যাচার-নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যার পর ফয়জাবাদ হিলসের এই নির্জন স্থানে গণকবর দিতো।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড সংলগ্ন এই গণকবর থেকে অনেকগুলো মানবকঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। ২০০৬ সালে সরকার এটি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয়। গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে টিলায় ওঠার জন্য নির্মাণ করা হয় একটি সিঁড়ি। উপরে হত্যাকাণ্ডের স্থানটিতে বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়। একই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর এর উদ্বোধন করেন তৎকালিন অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান।


বাহুবল উপজেলার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল হোসেন জানান, এটি সংস্কারের জন্য তারা অনেক চেষ্টা তদবির করেছেন। কিন্তু কোনো ফল পাননি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক সময় এখানে কাঁটাতারের বেড়া ছিল। সেটিও কে বা কারা তুলে ফেলেছে। অবিলম্বে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। 

বাহুবল উপজেলার শেষ প্রান্তে ঢাকা-সিলেট ভায়া মৌলভীবাজার সড়কের আমতলী চা বাগানে ঐতিহাসিক এ বধ্যভূমির অবস্থান। ওই সড়কে মিরপুর বাজার থেকে এগোলেই জ্বালানি তেল শোধনাগার। এর প্রধান ফটকের ঠিক উল্টো পাশেই এ বধ্যভূমি। আমতলী চা বাগানের ৪নং সেকশনের একটি টিলার উপর এটি অবস্থিত। এর চারপাশ টিলায় ঘেরা। কিন্তু দীর্ঘদিন এ স্থানটি চরম অবহেলায় পড়ে আছে।

মনোরম এ স্থানটিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন বনভোজনেও আসে। কিন্তু নির্মাণের পর থেকে এটি রক্ষণাবেক্ষণে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। ঝোপঝাড়ে ঢেকে গেলে বাগান কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে তা পরিচ্ছন্ন করে।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ