Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-05-13T12:45:28Z
গোলাপগঞ্জ

সুরমা নদীতে একটি সেতুর অভাবে লাখো মানুষের দুর্ভোগ

বিজ্ঞাপন

জাহিদ উদ্দিন : বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা। খেয়া ঘাটে রয়েছে একটি ছোট নৌকা। নৌকাটিতে জড়োসড়ো হয়ে বসে রয়েছে কয়েকজন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী। একটু পর আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী নৌকায় উঠলো। নৌকা পূর্ণ হয়ে গেছে মাঝি এমনটি বলার পরও কয়েকজন শিক্ষার্থী জোর করেই নৌকায় উঠে গেল। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে মাঝিকে ছাড়তে হলো নৌকা। বৃহস্পতিবার গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুরমা নদীর বাঘা লাল নগর খেয়াঘাটে দেখা গেল এ দৃশ্য।

গোলাপগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হচ্ছে বাঘা। এ ইউনিয়নটিকে উপজেলা সদর থেকে ভাগ করে রেখেছে সুরমা নদী। বাঘাবাসী দীর্ঘদিন থেকে সুরমা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে আসলেও জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। শুধু নির্বাচন এলেই সেতু নির্মাণের দাবি পূরণের আশ্বাস মেলে তাদের কাছ থেকে। আর নির্বাচন চলে গেলে আর তাদের দেখা মেলেনা। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাঘা ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামের মোট জনসংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। তাদের উপজেলা সদরে আসার একমাত্র ভরসা হচ্ছে নৌকা। এ ইউনিয়নের লোকজন সড়ক পথে বাঘা থেকে উপজেলা সদরে আসতে হলে সিলেট শহর হয়ে ২০ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। সুরমা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘ দিনের কষ্ট লাগব হবে। 

গোলাপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী বাঘা কালাকোনা গ্রামের এমএজি মস্তফা বলেন, সুরমা নদীতে একটি সেতু আমাদের অনেক দিনের দাবি। সেতুর অভাবে হাজার মানুষ পোহাচ্ছেন দুর্ভোগ। যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হলে বাঘায় অনেক শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। এতে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ অনেকটা এগিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। 

বাঘা তুরুগাঁও গ্রামের রব্বানি আহমদ জানান, সুরমা নদীতে সেতু নির্মাণ হলে বাঘা ইউনিয়নের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি জীবন মানেরও অনেক পরিবর্তন হবে। 

গোলাপগঞ্জ সরকারি এমসি একাডেমীর দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী কিবরিয়া আহমদ জানান, খেয়াঘাটে একটিমাত্র নৌকা থাকায় কলেজে যেতে অনেক অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় নৌকার জন্য কলেজে যেতে দেরি হয়ে যায়। 

লালনগর খেয়াঘাটের মাঝি চুনু মিয়া জানান, প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ হাজারো মানুষ খেয়াঘাটে নৌকায় পারাপার হন। অনেক সময় অধিক যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করাতে হয়। 

গোলাপগঞ্জ বাঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছানা মিয়া জানান, উন্নয়নের প্রথম ধাপ হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে ইতিমধ্যে একটি সেতু নির্মাণ হলেও সুরমা নদীতে এখনো কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। সুরমা নদীতে সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এখানে সেতু নির্মিত হলে কানাইঘাট উপজেলার সাথে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। এতে করে বাঘাবাসীসহ গোলাপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যবসার অনেক ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। তিনি গোলাপগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবি সুরমা নদীতে সেতু নির্মাণে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ