Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-01-20T11:58:43Z
সিলেট

‘আমরা চাষাভুষা নই’, শাবি শিক্ষিকার বক্তব্যে সমালোচনা

বিজ্ঞাপন

জি ভয়েস ডেস্ক: শিক্ষকদের নিয়ে করুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ এনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কিছুসংখ্যক শিক্ষক।

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এই কর্মসূচীতে এক শিক্ষিকার দেয়া বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
 
শিক্ষকদের বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশোভন মন্ত্যের অভিযেআগ এনে বলেন, 'আমরা সম্মানটুকুর জন্য কাজ করি এবং সম্মানের জন্যই শিক্ষকতা পেশায় এসেছি। আমরা বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ধারণ (Belong) করি। আমরা কোনো চাষাভুষা নই যে আমাদের যা খুশি তাই বলবে।'

লায়লা আশরাফুনের এই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কৃষক ও চাষীদের অপমান করা হয়েছে বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে মন্তব্য করেছে।

লায়লা আশরাফুনের এই বক্তব্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে এসে পৌছলে তাদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দেয়। এসময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন- 'চাষাভূষার সন্তান, আমরা সবাই সাস্টিয়ান'।

শিক্ষকের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলনকারী ছাত্রী শারমিন সিদ্দিকা মিলা বলেন, এমন বক্তব্যের মাধ্যমে ওই শিক্ষিকা শ্রেণি বিভাজন তৈরি করেছেন। এবং চাষাভূষার নিচু শ্রেণির লোক এটা বলতে চেয়েছেন। আমরাও চাষার সন্তান।

শিক্ষিকার এমন মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনা দেখা দিয়েছে।

এ মন্তব্যরর সমালোচনা করে সিলেটের নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল করিম কিম বলেন, শাবি’র শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের গালিগালাজ করেছ। অশোভন ও অসৌজন্যমূলক আচরন করেছে। তাই শাবি শিক্ষক সমিতির ব্যানারে স্যারেরা আন্দোলনে দাঁড়িয়েছেন। ভালো লাগছে উনারা শোভন-অশোভন, সৌজন্য-অসৌজন্য উপলব্ধি করতে পারেন। আজকাল অনেকে এসব উপলব্ধি করতে পারে না।

এখন কথা হলো, এই শিক্ষার্থীরা কোন সমাজ ও কোন শিক্ষকদের থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পা রেখেছে? দেশ সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিখারুন্নেসার অধ্যক্ষের কথা মনে আছে? মনে আছে উনার ফোনালাপ? উনার কিছু হয়েছে?

শাবি বা অন্যকোন বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষক সমিতি সেই ফোনালাপ প্রকাশের পর ব্যানার নিয়ে রাজপথে দাঁডিয়ে বলেছেন যে, এই অধ্যক্ষ অপসারন না হলে তার প্রতিষ্ঠানর ছাত্রীদের আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রহন করবো না। বলেছেন? নাহ। কেউ পথে নামেন নি। দেশ সেরা প্রতিষ্ঠানের যখন এই অবস্থা তখন অন্যদের অবস্থা কি হতে পারে?

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একজন চাষাভূষা শব্দ ব্যাবহার করে যা বলেছেন তাতে উনার উচ্চতা পরিমাপ হয়ে গেছে। উনার দাম্ভিক মন্তব্যের জন্য এই দেশের কৃষক-মজুরদের পক্ষ থেকে এখন মাঠে নামতে হবে। আর ভিসি সাহেবের পুরনো অডিও ক্লিপ জানান দিলো বিশ্বমানের বিদ্যালয়ে আমরা কাদের উপাচার্য করেছি। বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যলয়ে অসুস্থ, অসভ্য, বিকারগ্র্রস্ত ব্যাক্তিদের দায়িত্ব দিয়ে সুস্থ, সভ্য, বিনয়ী শিক্ষার্থী কিভাবে আশা করেন?

লায়লা আশরাফুনের বক্তব্যের সমালোচনা করে শাবির সাবেক শিক্ষার্থী প্রদীপ চন্দ্র দাস ফেসবুকে লেখেন, কথাবার্তা কিভাবে বলতে হয়, উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সামাল দেয়া, কিভাবে মানুষকে কনভিন্স করা যায়, সৌজন্যতা আর সহমর্মীতার শিক্ষা এসব মৌলিক বিষয়ের উপর  অন্যান্য সকল সরকারি কর্মচারীদের মতো কর্মজীবনের শুরুতে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন'।

দুপুরে শিক্ষকদের ওই বিক্ষোভে অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। সেই বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমরা ২০২২ সালে এসে কেন আমরা এই অপমানের শিকার হবো। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা কেমন শিক্ষার্থী তৈরি করছি, যে নারী শিক্ষকদের নিয়ে যা খুশি তাই বলবে। শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমরা জানি না। এই হামলা কে বা কারা করেছে এটা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। রাষ্ট্র এই তদন্তের কাজ করতে পারে। তিনি বাংলাদেশের সকল শিক্ষকদের তাদের পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার প্রতিবাদ জানানোর আহবান জানান।

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবস্থান নেন অর্ধশতাধিক শিক্ষক। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগসংবলিত নানা প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে তাদের হাত।


বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ