Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-01-16T17:08:52Z
সিলেট

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শাবিপ্রবি, হল ছাড়ার নির্দেশ

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ১২টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য।

রোববার (১৬ জানুয়ারি) সংঘর্ষের পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

এসময় তিনি বলেন, ‘দেশে এমন ঘটনা বিরল। শিক্ষার্থীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে এমন আচরণ করবে এটা আমি আশা করতে পারিনি। তারা শিক্ষকদের উপর আক্রমণ করবে এটা চিন্তাই করিনি। ইতোমধ্যে আমরা এটা নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলাম। এরই মাঝে কেউ একজন গুলি করে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তাতেই সংঘর্ষ তৈরি হয়।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় আমরা দুপুরে সিন্ডিকেট সদস্যদের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্বাবিদ্যালয়ের সকলরকম ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এমনকি সোমবার দুপুর ১২ টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার কথা বলা হবে। কারণ ইতোমধ্যে দেশে ১৫ শতাংশের উপর চলে গেছে করোনা।’

তবে অফিসিয়াল বিভিন্ন কিছুটা চলমান থাকবে বলেও জানান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

অপরদিকে রাত ৮ টার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মূল ফটক তালাবদ্ধ করে রাখতে দেখা যায়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও রাবার ব্যুলেট নিক্ষেপের খবর ছপড়িয়ে পড়লে উত্তপ্ত হয়ে উঠে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসে জড়ো হবার চেষ্টা করেন। তবে কোনো শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পে প্রবেশ করতে দেয়নি প্রশাসন।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাত পৌনে ৯ টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মূল ফটকের বাহিরে জড়ো হয়ে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।

এর আগে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ ওয়াজেদ মিয়া ভবনের ভেতরে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ রেখে বাহিরে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিলে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করে বাসভবনে নিয়ে যায়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, পুলিশ ও শিক্ষার্থীসহ অর্ধশত আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও সিলেটের মাউন্ট এডোড়া হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোন কারণ ছাড়াই পুলিশ অতর্কিত আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ ও গুলি চালায়। তবে পুলিশের দাবি উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চড়াও হলে।তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে টিয়ারগ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়া হয়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি ওয়াজেদ আলি ভবনের ভেতর ঢুকেন। তখন নিরাপত্তাকর্মীরা সকল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। তাই বাহিরে অবস্থান করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে গেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস এবং গুলি ছুঁড়ে। এতে অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

তবে পুলিশের দাবি, উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীরা চড়াও হন। তাই তাদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে সংঘর্ষ তৈরি হয়।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, তিনিসহ পুলিশের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

অধ্যাপক জহিরের বিষয়ে উপকমিশনার বলেন, পুলিশের গুলিতে তিনি গুলিবিদ্ধ হননি। ওই গুলি কারা ছুড়েছে তা তিনি জানেন না। অধ্যাপককে মাউন্ড এডোরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক নারী কনস্টেবলও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ