Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-02-26T15:54:26Z
সিলেট

সিলেটে উপবৃত্তির নামে ‘বিকাশ প্রতারণা’

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে উপবৃত্তির টাকা দেয়া হচ্ছে এমন তথ্য জানিয়ে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর দিয়ে ভুয়া মেসেজ (এসএমএস) পাঠানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, প্রতারণার উদ্দেশ্যেই এমন মেসেজ পাঠানো হতে পারে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা যাদের ব্যাংক হিসাবে দেয়া আছে তাদের উপবৃত্তি টাকা সরাসরি ব্যাংকে জমা হয়। আর যাদের ব্যাংক হিসাব নেই তাদের টাকা বিভিন্ন মোবাইল ফিনান্সিয়াল সেবা (বিকাশ, নগদ, রকেট) ইত্যাদি ব্যবহার করে পাঠানো হয়। সরাসরি মোবাইল নম্বর থেকে এভাবে কল বা এসএমএস পাঠিয়ে দেয়া হয় না।

এদিকে গত কয়েকদিন আগে এমন একটি মেসেজ এসেছে নগরীর শাহজালাল উপশহরের বাসিন্দা হেদায়ত হোসেন খানের মোবাইলে। তাতে লেখা রয়েছে - ‘প্রিয় শিক্ষার্থী (পড়ারফ-১৯) এর কারণে তোমাদের উপবৃত্তির ৪২০০ টাকা দেয়া হচ্ছে। টাকা গ্রহণের জন্য নিম্নোক্ত শিক্ষাবোর্ডের নম্বরে যোগাযোগ করুন। মোবাইল নম্বর ০১৮৭৫৪৪৯৩৩৮/০১৮৯৩৭৭২০৭৮ সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা।

ওই মেসেজটি পাঠানো হয় ০১৮৭৫৪৪৯৩৩৮ নম্বর থেকে। তবে হেদায়ত হোসেন খানের (৭০) কোনো ছেলে বা মেয়ে কেউই শিক্ষার্থী নয়।

এছাড়া সোমবার সালমান আহমদ নামের আরো একজনের কাছে মোবাইল নম্বরে এসএমএস আসে- ‘প্রিয় স্টুডেন্ট, তোমাদের উপবৃত্তির টাকা দেয়া হচ্ছে ৪২০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৭৮৫২৭৭৩১৫।’ ওই মেসেজটি পাঠানো হয় ০১৬১২২৫৯৯৪৮ নম্বর থেকে। পরে ০১৬১২২৫৯৯৪৮ এই নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তাছাড়া যে নম্বর থেকে মেসেজ এসেছে ওই নম্বরে একাধিকবার কল করলে সেই নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

দাইয়ান আহমদ সিলেটের একটি স্থানীয় পত্রিকায় চাকরি করেন। এমন মেসেজ তার মোবাইলেও এসেছে। তবে নম্বর আলাদা ছিলো। উপবৃত্তির এমন এসএমএস চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষকে দেয়া হচ্ছে। প্রতারণার উদ্দেশ্যেই এমন মেসেজ পাঠানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

জানতে চাইলে বিকাশের সিলেট ডিস্ট্রিবিউটর নাসিম হোসাইন বলেন, সরকারের পক্ষে বিকাশ শুধু শিক্ষার্থীর অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেয়। যেসব অ্যাকাউন্টে উপবৃত্তির টাকা দেয়া হয়, তা সরাসরি বিকাশ প্রতিনিধিরা খুলে দেন। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কিভাবে টাকা দেয়া হবে, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এর পরও কেউ ফোন দিয়ে ভিন্ন কিছু বললে সেটা বুঝতে হবে প্রতারণা। সব পর্যায়ে সচেতনতার মাধ্যমে এ ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে হবে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চক্রের সদস্যরা প্রথমে শিক্ষার্থীদের মোবাইলে কল দিয়ে নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয়। এরপর তাদের একটি বিকাশ নম্বর ও পিন নম্বর দিতে বলে। যে শিক্ষার্থীরা সরল বিশ্বাসে পিন নম্বর বলে দেয়, তাদের বিকাশে থাকা টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থী পাঁচ হাজার খুইয়েছেন। তবে কেউ কেউ লজ্জায় টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি প্রকাশ করছেন না।

এ ব্যাপারে শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল গোলাম রব্বানী জানান, এমন মেসেজের কথা শুনেছি। আমার মনে হয় প্রতারণার উদ্দেশ্যেই এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

জানতে চাইলে সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ ওয়াদুদ বলেন, উপবৃত্তির বিষয়ে টাকা চাওয়া বা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর্থিক প্রলোভনে প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে টাকা লেনদেন না করতে সর্তক থেকে প্রয়োজনে শিক্ষা অফিস, কলেজ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

এ ব্যাপারে র‌্যাব-৯ সিলেটের অধিনায়ক লে: কর্নেল আবদুর রহমান জানান, এগুলো ভুয়া এসএমএস। যাদের টাকা আসবে এমনিতেই চলে আসবে। কোনো ধরনের মেসেজ পাঠানো হবে না।

এসএমএসের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এসব মোবাইল নম্বর সম্পর্কে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আর্থিক প্রলোভনে টাকা লেনদেন করার ব্যাপারে সর্তক থাকতে বলেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

সূত্র : নয়া দিগন্ত 
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ