Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
সর্বশেষ সংষ্করণ 2022-09-26T08:15:38Z
গোলাপগঞ্জলিড নিউজ

গোলাপগঞ্জে ছড়াচ্ছে ছোঁয়াচে ‘চোখ ওঠা' রোগ

বিজ্ঞাপন

দেলোয়ার হোসেন মাহমুদ : গোলাপগঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ কনজাংকটিভা বা চোখের প্রদাহ। একে চোখ ওঠা রোগও বলা হয়। আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সী মানুষ। তবে শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি।

গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে রোগটির সংক্রমণ। সতর্ক না হলে এ রোগ থেকে কর্নিয়ার আলসার ও অন্ধত্বের মতো গুরুতর অবস্থাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অধিক মাত্রায় ছোঁয়াচে হওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত হলে নিজে সতর্ক হতে হবে, দ্রুত নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।

সেপ্টেম্বরে এসে বেড়েছে এর প্রকোপ। একসঙ্গে খেলাধুলা ও সতর্কতা ছাড়াই সংস্পর্শে আসার কারণে শিশুদের রোগটি বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সম্প্রতি সিলেট শহর থেকে ফিরে সাংবাদিক শহীদুর রহমান জানান বাসায় আসার পর থেকেই দেখেন চোখ জ্বালা করছে এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আয়নায় দেখেন চোখ লাল হয়ে আছে, ফুলে গেছে চোখের পাতা।আমার আরো দুই ভাই এই রোগে আক্রান্ত হন। যেমন চোখে হাত দেওয়ার পর সেই হাত যেখানেই ছোঁয়ানো হয়, টাওয়েল, রুমাল ইত্যাদি অন্যের চোখের সংস্পর্শে এলে তার মধ্যেও ছড়ায়। তাই অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। নিজের ব্যবহার করা কাপড় কিংবা টাওয়েল আলাদা রাখতে হবে। যেখানে-সেখানে ব্যবহৃত টিস্যু ফেলা যাবে না। আর এই সময়ে বাসায় বিশ্রাম নিলে অন্য কেউ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে। 

একজন চিকিৎসক বলেন ‘এটি ব্যাকটেরিয়াল কনজাংকটিভাইটিস বা ভাইরাল কনজাংকটিভাইটিস- দুটিই হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে ভাইরাল কনজাংকটিভাইটিসই বেশি হচ্ছে। ব্যাকটেরিয়ালটাও অনেকের ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে রোগী এসে আমাদের জানায় চোখ লাল হয়ে গেছে, চোখের পাতা ফুলে গেছে, চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, চোখ খচখচ করছে- এ ধরনের সমস্যার কথা।’

এই চিকিৎসক আরও বলেন, এসময় যদি আমরা দেখি রোগীর চোখে আঠা আঠা হচ্ছে কিংবা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেক বেশি পিচুটি থাকছে তখন বুঝি এটি ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস। বর্তমানে যেটি দেখা যাচ্ছে তা হচ্ছে চোখের মধ্যে পানি জাতীয় জিনিস বেশি আসছে। এক্ষেত্রে আমরা ধরে নেই যে এটি ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস। বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশই এই সমস্যা নিয়ে আসছেন। কনজাংকটিভা বা চোখের প্রদাহ বলে। এটি নানা কারণে হতে পারে। যেমন- এলার্জি, বায়ুদূষণ, চোখে তীব্র আলো পড়া ইত্যাদি। এগুলো এ সমস্যার অসংক্রামক কারণ। তবে সম্প্রতি যে প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, এটি সম্ভবত কোনো সংক্রামক জীবাণুর মাধ্যমে ছড়াচ্ছে।

এই রোগ সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে জানিয়ে একজন চিকিৎসক বলেন, কখনো কখনো এটি কর্নিয়ায় ছড়ায়, এতে কর্নিয়ার আলসার এমনকি অন্ধত্বের দিকে চলে যেতে পারে। এত হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। একাধিক স্কুলে এ ধরনের ঘটনা দেখা দিলে স্বাস্থ্য বিভাগকে সতর্কতা জারি করতে হবে। প্রয়োজনে সেসব স্কুলে সাময়িক ছুটি দেওয়া যেতে পারে।

সাধারণভাবে এ রোগ সাত থেকে আটদিনে ভালো হয়ে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ ও সতর্কা অনুযায়ী চলাফেরা করলে দ্রুতই এ রোগ সারবে।

চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হলে সচেতন থাকা, বেশি বেশি হাত ধোয়া, সংক্রমিত চোখ/চোখ দুটি বেশি না ছোঁয়া, নিজের তোয়ালে ও প্রসাধনী অন্য কাউকে ব্যবহার করতে না দেওয়া উচিত। এতে অন্যরা সংক্রমিত হবে না। এছাড়া চোখে কোনো ওষুধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া কারও চোখের প্রদাহ ও জ্বর একই সঙ্গে থাকলে তার করোনা টেস্ট করানো উচিত।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ