Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩
সর্বশেষ সংষ্করণ 2023-10-07T17:11:50Z
বিশেষ সংখ্যালিড নিউজসিলেট

সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের দুর্ভোগ আর কতকাল

বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন উপজেলার যাতায়াতের একমাত্র সড়কের বর্তমান অবস্থা। ছবি : অলিউর রহমান তামিম

অলিউর রহমান তামিম : সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক যাত্রী সাধারণের কাছে বর্তমানে দূর্ভোগের নাম। এটি সড়ক নয় যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিগত কয়েকমাস আগে রাস্তাটি নামে মাত্র সংস্কার করা হলেও কয়েকমাসের মধ্যেই আবারও মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। বর্তমানে রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে সংস্কারের জন্য খুঁড়ে রাখা হয়েছে। আর এই খুঁড়া অংশেই ঘটছে সবচেয়ে বেশি দূর্ঘটনা।

সিলেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়ক সিলেট-জকিগঞ্জ-বিয়ানবাজার-বড়লেখা সড়ক দিয়ে ৫টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ চলাচল করেন। যাত্রী পরিবহন ছাড়াও মালামাল পরিবহনের জন্য প্রতিদিন কয়েক হাজার যানচলাচল করে। গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ভারী লরি এই সড়ক দিয়েই চলাচল করে। সড়কটির পিচ খোয়া উঠে গিয়ে সৃষ্টি হওয়া ছোট-বড় গর্তে ক্ষত-বিক্ষত গুরুত্বপূর্ণ সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কটি। গাড়ি এসব গর্তে হেলেদুলে উপরে নিচে ‘ঝাঁকাঝাঁকি’ করে অতিক্রম করছে অথবা গর্তে পড়ে আটকা পড়ছে। গর্তের কারণে ‘ঝাঁকাঝাঁকি’ ও অনেক সময় গাড়ি আটকা পড়ায় দুই দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

বিশেষ করে হেতিমগঞ্জে আসা মাত্রই ছোটবড় গাড়ী ও সাধারণ যাত্রীরা পড়েন সমস্যার দাবানলে। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় প্রায় দু’কিলোমিটারের এই রাস্তায়। এই মরণ ফাঁদ গর্তে পড়ে প্রতিদিন কোন না কোন গাড়ী নষ্ট হচ্ছে। দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেকেই হাত পা ভেঙ্গে কষ্টের জীবন যাপন করছেন।

এ সড়কেই গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাঘা ইউনিয়নের তুরুগবাঘ গ্রামের বাসন আহমদ নামের এক ব্যক্তিকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর ২ অক্টোবর (সোমবার) আহত বাসন আহমদ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

অন্যান্য গাড়ির মতো যানজটে আটকে আছে এম্বুলেন্স। ছবি : অলিউর রহমান তামিম

রাস্তা সংস্কারের নামে বিভিন্ন জায়গায় খুঁড়ে রাখাকে সচেতন মহল অপরিকল্পিত কাজ বলছেন। তবে বৃষ্টির কারণে রাস্তা সংস্কারে ব্যাগাত ঘটছে বলছেন নির্মান শ্রমিকরা। 

অনেক সময় রাস্তায় পাথর বুজাই ট্রাক দেবেগেলে সড়কের দুই দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ ও সময় ক্ষেপণকারী যানজট এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ছোট ও প্রাইভেট গাড়িগুলো আশপাশের গ্রামের রাস্তাগুলো ব্যবহার করায় গ্রামের সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী। গ্রামের রাস্তাগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হওয়ায় গ্রামীণ রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। সড়কের এসব গর্ত দ্রুত সংস্কার না করলে গর্ত আরও বড় হয়ে যানচলাচল কঠিন হয়ে যাবে।

স্থানীয়রা জানান, আমাদের অসুস্থ রোগীদের এ রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেলে রোগী মৃত্যু পথযাত্রী হয়ে যায়। গর্ভবতী মায়েরা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে সীমাহীন বিড়ম্বনার শিকার হয়। এরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যায়।

আইএলটি ট্রেইনার শেখ রুহেল বলেন, রাস্তা নয়, সড়কগুলো যেন মরণফাঁদ, মানুষ মরার গ্যারাকল। জনগণের পথচলার কষ্টের কাহিনী কে শুনবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়েই যেতে হয়। আগে সিলেট সদরে যেতে যে সময় লাগতো এখন তিনগুণ বেশি সময় লাগে। 

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মোবারক মিয়া বলেন, কয়েক মাস ধরে রাস্তার কাজ চলার কারণে প্রতিদিনই এই দুই কিলোমিটার দূরত্বের রাস্তা যেতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। আবার অনেক সময় যানজটেই বসে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এখন এই রোডে গাড়ি চালানোই দায়।

ব্যাবসায়ী জাকির জানান, কোনো প্রকার পরিকল্পনা ছাড়াই রাস্তার কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তার বিভিন্ন অংশে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। যার কারণে মানুষ পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে।

শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান বলেন, ইউনিভার্সিটিতে আসার একমাত্র সড়ক হচ্ছে সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক। আগে বাসা থেকে এক ঘন্টা আগে বাহির হলেই খুব সহজেই সময়ের আগেই ক্লাসে যেতে পারতাম। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় ৩ ঘন্টা আগে বাসা থেকে বাহির হতে হয়। জ্যামে আটকে যাব জ্যামে আটকে যাব নিশ্চয়তা অনিশ্চয়তায় সময় কাটে। 

উপ - বিভাগীয় প্রকৌশলী সওজ মোহাম্মদ ইকবাল আহমেদের সাথে ফোনকলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে বৃষ্টির কারণে ঠিকমত রাস্তায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ১৫ দিনের ভেতরে জনসাধারণকে ভালো রাস্তা উপহার দিতে।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ