বিজ্ঞাপন
জিভি২৪ নিউজঃ সিলেটে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে দুবাই প্রবাসী এক যুবক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বুধবার রাতে তিনি সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাকে সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার তার রক্ত সংগ্রহ করেছে আইসিসিডিআর’র টিম। এখন রক্ত ঢাকায় পাঠিয়ে টেস্ট করা হবে। আর এই রিপোর্ট আসতে সময় লাগবে দুই দিন। এরপর জানা যাবে তিনি আসলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কি-না।
দুবাই প্রবাসী এই যুবকের নাম জাকারিয়া (৩২)। তিনি কানাইঘাট উপজেলার সুতারগ্রামের হাফিজ আলী হোসেনের ছেলে।
বৃহস্পতিবার সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে এই রোগীকে দেখার জন্য ও সাংবাদিকরা সংবাদ কাভার করার জন্য হাসপাতালে ভীড় জমান। এ সময় আজমল নামের এক যুবক করোনা ভাইরাস সন্দেহে ভর্তি থাকা রোগীর সাথে গলায় ধরে একটি ছবি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করেন।
সাথে সাথে এই ছবি ভাইরাল হতে থাকে। অনেকে এই ছবি তুলার জন্য বাহবা দেন। আবার সচেতন মহল এ ঘটনার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সচেতন মহল বলছেন, যদি এই যুবকের করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে তাহলে তার সাথে ছবি তুলা ও সংস্পর্শে যাওয়ার কারণে আজমলেরও এই রোগ দেখা দিতে পারে। কারণ এই রোগ ছোঁয়াচে। এতে এই যুবকের সংস্পর্শের কারনে সারা সিলেটেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি পোষ্ট করেছেন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাকিল রহমান।
একজন ডাক্তার হিসেবে এখানে কিছু কথা না বললেই নয়। আজ কয়েকজনের ফেইসবুক স্টেটাসে দেখলাম একজন সাংবাদিক ভাই সিলেট সদর হাসপাতালে করোনার সাইন সিম্পটম নিয়ে ভর্তি (পেশেন্ট দুবাইতে ছিলেন, ওখানে একটি হোটেলে কাজ করতেন এবং প্রচুর চাইনিজ লোক সেখানে আাসা যাওয়া করতো) একজন রোগীকে দেখতে গিয়ে উনার পাশে বসে মাস্ক বা কোন সেফটি ছাড়াই ছবি তুলেছেন। এবং কয়েকজনের স্টেটাসে লিখা দেখলাম এই রোগীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
এখানে একটু ইনফরমেশন গ্যাপ আছে, সিলেট করনা ভাইরাসের লক্ষন সহ কাউকে পাওয়া গেলে (সরকারি ভাবে ওর্ডার দেওয়া) তাকে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা না করে সাথে সাথে সিলেট সদর হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য।
সরকারের আদেশ মতে ঢাকাসহ সকল বিভাগীয় শহরে একটি নির্দিষ্ট হাসপাতালে করোনা কেয়ার ইউনিট নামে একটি আইসোলেশন সেন্টার শুরু করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ওই রোগী সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই যথেষ্ট সেফটি ও সিকিউরিটি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ প্রতিনিয়তই সাসপেক্টড পেশেন্টকে দেখে যাচ্ছেন। এবং পেশেন্ট এর হিস্ট্রি ও সাইন - সিম্পটম দেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বিবেচনায় এই পেশেন্ট করনার দিকে যায়।
তারপরও আজ আইসিআর এর একটি এক্সপার্ট প্রতিনিধি দল সকালে ঢাকা থেকে আসে রোগী দেখে ল্যাব ইনবেষ্টিগেশনের জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত ও সোয়াব স্যাম্পুল ঢাকা নিয়ে গেছেন। এই ইনবেষ্টিগেশনের রিপোর্ট আসতে দুদিন সময় লাগবে। তাই আপাতত আমরা সাধারণ জনগণ এই রোগীকে উৎসাহী হয়ে দেখা পরিহার করি। এই রোগী ভাইরাস আপনার শরীরে বাসা বাধলে অনেক সময় এই করোনার লক্ষন ১৪ দিন পর আপনার শরীরে দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে আপনিও হাজার মানুষকে ইনফেকটেড করতে পারেন।
তাই আপনার, আমার একটি ভূলে আমাদের পরিবার সহ একটি নগর মৃত্যুপূরীতে পরিণত হতে পারে।
লেখক ও পরামর্শদাতাঃ
ডাঃ শাকিল রহমান
সাধারণ সম্পাদক
ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)
সিলেট জেলা।
সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি।