Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০
সর্বশেষ সংষ্করণ 2020-10-10T04:29:29Z
গোলাপগঞ্জ

সরকারি নির্দেশনা অমান্য,গোলাপগঞ্জে চলছে কোচিং বাণিজ্য

বিজ্ঞাপন

ফাহিম আহমদ: মুনাফালোভী শিক্ষকরা লুকিয়ে লুকিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যাচ করে প্রাইভেট-বাণিজ্য। মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানো বন্ধের নির্দেশ থাকা সত্বেও তারা প্রশাসনের অগোচরে চালিয়ে যাচ্ছেন বাণিজ্য।

গোলাপগঞ্জ উপজেলার আনাচে-কানাচে গত কয়েকদিন থেকে শুরু হয়েছে কিছু অর্থলোভী শিক্ষকদের প্রাইভেট-বাণিজ্য। প্রতিদিন সকাল হলে শুরু হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষকদের কাছে পড়তে যাওয়া। পিটে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে অভিরাম ছুটে চলা উদ্দেশ্য কোচিং সেন্টার বা শিক্ষকের বাসা। অনেক শিক্ষক দুই-একজন শিক্ষার্থীকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখেন প্রশাসনের লোক আসছে কী না দেখার জন্য।

উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা থাকেন সিলেট নগরীতে। আবার অনেকে চাকরির সুবাদে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। শিক্ষকতার জন্য আসতে হয় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু এখন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে কোচিং বাণিজ্যর জন্য প্রতিদিন কেউ বা মোটরসাইকেল নিয়ে আবার কেউ বা সিএনজি অটোরিকশা বা বাস যোগে আসছেন কোচিং করাতে।

শুক্রবার ছুটির দিন। কিন্তু কোচিংয়ের জন্য শুক্রবার বেশ উপযোগী। উপজেলার বেশ কয়েকটি জায়গা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এক সঙ্গে একেকটি কক্ষে ব্যাচ করে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে বসিয়ে এ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে নিজ বাসা বা ভাড়া বাসায় চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাইভেট-বাণিজ্য।

এ ছাড়াও উপজেলার কিছু কিছু এলাকাতেও বিশেষ কৌশলে শুরু হয়েছে প্রাইভেট–বাণিজ্য। তবে তা সীমিত আকারে ও গোপনীয় পরিবেশের মধ্যে হচ্ছে।

উপজেলার পৌর এলাকার কদমতলী, পৌরসভার ভিতরে বাসায়, মার্ভেলাস টাওয়ার, সরকারি এমসি একাডেমির সামনে, লক্ষীপাশা ইউপির আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের বিভিন্ন মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনেও চলছে অবাধে কোচিং বা প্রাইভেট-বাণিজ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রাইভেট–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকেরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। প্রাইভেট ও কোচিং নিষিদ্ধ করার পর বেশ কিছুদিন তাঁরা পড়ানো বন্ধ রেখেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন হলো, আবারও তাঁরা আগের মতোই প্রায় প্রকাশ্যে প্রাইভেট–বাণিজ্য শুরু করেছেন।

সরকারি এমসি একাডেমির সামনে প্রাইভেট পড়ান এক শিক্ষক জানান, শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবক প্রাইভেট পড়ানোর জন্য অনুরোধ করতেছেন। তাদের অনুরোধ রাখতে গিয়ে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পড়াতে হচ্ছে।

একজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের বাসা থেকে পড়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য তারা শিক্ষকের কাছে পড়তে আসছেন।

জামাল আহমদ নামে ৬ষ্ঠ শ্রেনী পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, কখন স্কুল খুলবে জানা নেই। সে জন্য বাচ্চাকে প্রাইভেট পড়াতে হচ্ছে। আর শিক্ষকরা বললেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পড়ানো হয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দেশের সকল কোচিং বা প্রাইভেট বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু যে সকল শিক্ষকরা প্রশাসনের অগোচরে প্রাইভেট পরিচালনা করে যাচ্ছেন বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। প্রাইমারি কোন শিক্ষক জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, যারা আমাদের লোকিয়ে কোচিং বা প্রাইভেট পরিচালনা করছে তাদের চিহ্নিত করে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনার কাছে প্রমাণ থাকলে আমাকে তালিকা দিবেন, আমরা সেটি বন্ধ করে দিব।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ