Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-08-13T04:28:57Z
জকিগঞ্জ

গ্যাসের সংযোগ ও গ্যাসভিত্তিক কলকারখানার দাবি জকিগঞ্জবাসীর

বিজ্ঞাপন

ডেস্ক রিপোর্ট : জকিগঞ্জে বাপেক্সের খননকৃত গ্যাসক্ষেত্রকে দেশের ২৮ তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। জকিগঞ্জে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের খবরে সীমান্ত উপজেলাটিতে আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে আছে নানা প্রত্যাশাও।

স্থানীয়দের দাবি, নতুন এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে জকিগঞ্জে যেন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। জকিগঞ্জে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হলে অবহেলিত এ উপজেলা উন্নত হবে। শিক্ষিত বেকার লোকজনের কর্মস্থানের ব্যবস্থা হবে। হাওরে বেকার হয়ে যাওয়া জমিতে গ্যাসনির্ভর কলকারখানা গড়ে উঠবে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক শক্তি আরও বাড়বে।

জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদ বলেন, এই গ্যাসক্ষেত্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে ষোষণা দেওয়ায় এলাকাবাসী খুশি। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে জকিগঞ্জে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার দাবি সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের। গ্যাস সংযোগ পেলে বেকারত্ব কমে আসবে। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে গ্যাসভিত্তিক কলকারখানা স্থাপনের আহ্বান জানান তিনি।

আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক আহমদ বলেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করে পশ্চিম আনন্দপুরের ওই জায়গাটি বাপেক্সের নজরে এনেছিলাম। এরপর বাপেক্স দীর্ঘ অনুসন্ধান করে গ্যাস পেয়েছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হওয়ায় আমিসহ জকিগঞ্জবাসী খুবই খুশি। এখন আমাদের দাবি, জকিগঞ্জে যেন দ্রুত গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয় এবং গ্যাসক্ষেত্রে যেন স্থানীয় শিক্ষিত বেকার তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।

জকিগঞ্জ উপজেলায় গ্যাস সংযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নতুন এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে জকিগঞ্জে সংযোগ দেওয়া হলে অবহেলিত এলাকা উন্নত হবে। হাওরে অনেক জায়গা বেকার পড়ে আছে। গ্যাসের অভাবে এতদিন কলকারখানা গড়ে উঠতে পারেনি। তিনি বলেন, গ্যাসক্ষেত্রে এলাকার বেকার লোকজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজে লাগাতে হবে। জনবল স্থানীয় এলাকা থেকে নিতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জানা গেছে, রুপকল্প-২ খনন প্রকল্পের অধীনে জকিগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম আনন্দপুরে একটি কূপ খননের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। লক্ষ্যমাত্রা ও প্রত্যাশা ছিল ২ হাজার ৯৯১ মিটার খনন আর ৬০ থেকে ১৫০ বিলিয়ন ঘটফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা। জমি অধিগ্রহণ শেষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় তেল গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপক্সে নিজস্ব বিজয়-১২ রিগ স্থাপনের মাধ্যমে মূল কূপ খননের কাজ শুরু করে গত ১ মার্চ। রাত-দিন এ কর্মযজ্ঞ চলে এখানে। সে কারণেই মাত্র ২ মাস ৭ দিন পর ২ হাজার ৮৮৮ মিটার কূপ খনন কাজ শেষ হয় গত ৮ মে।

যদিও ২ হাজার ৮৭০ থেকে ২ হাজার ৮৮৮ মিটারের মধ্যেই গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। গত ৮ মে ডিএসটি পরীক্ষা শেষে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয় এখানে গ্যাস মজুদের বিষয়টি। প্রকল্পটির পরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ কবির জানান, এই স্থানে গ্যাস পাওয়ার পর তাদের ধারণা এ অঞ্চলে আরও গ্যাস রয়েছে। তাই তারা আরও ১৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপ চালাতে চান।

অনুমোদন পেলে খুব দ্রুতই জরিপের কাজ শুরু করবে বাপেক্স। এই প্রকল্পটিতে যুক্ত হওয়ায় ৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও ৭৫ কোটি টাকা খরচ করেই প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে বাপেক্স। এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত অনুসন্ধান এবং সফলতা। মাত্র ২ মাস ৭ দিনেই কূপ খনন শেষ হওয়াকে তিনি দেশের ইতিহাসে দ্রুততম খনন কাজ দাবি করেন।

এই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে কত সময় লাগতে পারে এমন প্রশ্নে সাঈদ মোহাম্মদ কবির জানান, সেটা নির্ভর করবে গ্রিড লাইন স্থাপনে কত সময় লাগবে তার ওপর। এ বিষয়টি নির্ভর করবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জিটিসিএল এর ওপর।
বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ