Advertisement (Custom)

বিজ্ঞাপন
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১
সর্বশেষ সংষ্করণ 2021-08-25T09:42:49Z
কোম্পানীগঞ্জ

কোম্পানীগঞ্জে নিখোঁজ সেই মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েটি ধর্ষণের শিকার

বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে এক মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার রুবেল বিশ্বাস (২২) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। ওই যুবক উপজেলার বেতমুড়া গ্রামের মুক্তেশ্বর বিশ্বাসের ছেলে।

এ ঘটনায় বুধবার (২৫ আগস্ট) রাতে ধর্ষিতা মানসিক প্রতিবন্ধীর মা বাদী হয়ে ধর্ষকের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের সিঁড়ির নিচে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে একা পেয়ে রুবেল বিশ্বাস নামের এক গৃহশিক্ষক জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এমন সময় প্রতিবন্ধী মেয়ের চিৎকার শুনে রায়হান ও রুমান নামের দুই যুবক ছুটে আসে। এসময় রুবেল বিশ্বাস পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে রায়হান ও রুমান তাকে আটক করে উপস্থিত  মুরব্বি শামছু মিয়া, ইকবাল হোসেন, নিকসন আচার্য সহ স্থানীয়দের কাছে নিয়ে আসে। 

মেয়ের বাবা-মায়ের নাম ও  ঠিকানা না পেয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষী ও অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিতে মুরব্বিরা রুবেল বিশ্বাসের আত্মীয় উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারী সুকুমার বিশ্বাসের কাছে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও অভিযুক্তকে শর্তসাপেক্ষে জিম্মায় রাখেন। প্রতিবন্ধী মেয়ের পরিবারের ঠিকানা খোঁজার জন্য (পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও ফেসবুক মাধ্যমে প্রচার) সুকুমার বিশ্বাসকে তিন দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। প্রতিবন্ধী ভারসাম্যহীন মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পেলে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে সকলে সহযোগিতা করবে। তিন দিনের মধ্যে ভারসাম্যহীন মেয়ের পরিবারের সন্ধান না পেলে ছেলে ও প্রতিবন্দীকে থানায় সোর্পদ করা হবে।

উপস্থিত মুরব্বি সামছু মিয়া ও ইকবাল হোসেন জানান, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযুক্ত রুবেল বিশ্বাসকে আটক করা হয়। মেয়েটি ভারসাম্যহীন তাই তার ঠিকানা বলতে পারছিল না। তার দায়িত্ব কেউ নিতে চাইছিল না। ন্যায় বিচারের জন্য ও মেয়েটির নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে, মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পাওয়ার স্বার্থে অভিযুক্ত যুবক সহ মেয়েকে সুকুমার বিশ্বাসের জিম্মায় রাখা হয়েছিল।

স্থানীয় সংবাদিক কবির আহমদের নিউজের মাধ্যমে মেয়েটি তার পরিবার খুঁজে পেয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে রুবেল বিশ্বাসকে আসামী করে ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। আমরা ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ ব্যাপারে সাংবাদিক কবির আহমদ জানান, ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী মেয়েটি একটি অবিশ্বাস ঘটনার স্বীকার হয়েছে জানতে পেরে আমি উপস্থিত হয়। এসময় আমি দেখতে পায় অভিযুক্ত যুবকের কাছ থেকে মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি পরিচয়ে একজন ব্যক্তি প্রতিবন্ধী মেয়ের চিকিৎসা ও পূর্ণবাসনের জন্য ২০ হাজার টাকা নিয়ে মেয়েটিকে তার জিম্মায় নিয়ে যাচ্ছে। 

এমন সময় আমি ও আমার বন্ধু সোহাগ বাঁধা দেয় এবং অভিযুক্ত যুবক ও প্রতিবন্ধী মেয়েকে থানায় দিতে পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে মুরব্বিদের সিদ্ধান্তে ন্যায় বিচারের স্বার্থে অভিযুক্ত যুবক ও প্রতিবন্ধী মেয়েকে ভূমি অফিসে কর্মচারী সুকুমারের হেফাজতে রাখা হয়। তিন দিনের মধ্যে পরিবারের সন্ধান পেলে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহযোগিতা করা হবে। মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ হওয়ার পরে মেয়ে পরিবারের সন্ধান পাওয়ার খবর আমাকে জানান সুকুমার বিশ্বাস। ঘটনার বিস্তারিত শুনে দৈনিক একাত্তরের কথা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জিকরুল ভাই আমাকে ফোন দিলে দু'জন পরামর্শ করে থানায় খবর দিয়ে ধর্ষক ও ভিকটিমকে থানায় নেওয়ার ব্যবস্থা করি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রায়হান ও রুমান জানান, মহিলা কন্ঠে চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করি। আমাদেরকে দেখে রুবেল বিশ্বাস পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে আমাদের ডাকাডাকি শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে আটক করে।

প্রতিবন্ধী ওই মেয়েটির মা বলেন, গেল শুক্রবার সে তাঁর বাবার সাথে শাহজালাল মাজার জিয়ারত করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক খুঁজাখুঁজি করে তাকে পায়নি। মঙ্গলবার রাতে ডাকঘর গ্রামের একজন আমাকে জানান সাংবাদিক কবির আহমদ নামের একজন আমার মেয়ের পরিবারের সন্ধান চেয়ে নিউজ করেছে। নিউজ থেকে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে সুকুমার বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করে রাতেই থানা বাজার সাংবাদিক আবিদুর রহমানের অফিসে মেয়েকে নিতে আসি। এসময় তারা আমাকে ঐ ঘটনা না বলেই আমার মেয়েকে বুঝিয়ে দিতে চাই। পরে রায়হান ও কামরান সহ কয়েক ছেলের কাছ থেকে ঘটনা শুনি তার মাঝেই পুলিশ আসে। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে ধর্ষন মামলা করেছি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভূমি অফিসের কর্মচারী সুকুমার বিশ্বাস ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রতিবন্ধী মেয়ের পরিবারের সন্ধান পাওয়া ছিল জরুরি তাই আমি সাংবাদিক কবির আহমদ ভাইয়ের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। তিনি ফেসবুক পোষ্ট ও সিলেট ভয়েসে নিউজ করার কিছুক্ষণ পরেই মেয়ের মা আমার নাম্বার ফোন দিয়ে যোগাযোগ করে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল জানান, মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েটির মা বাদী হয়ে রুবেল বিশ্বাসকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। (মামলা নং-১১) ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। যুবককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় সংবাদ